
ভোটারদের সম্মান ও আত্মমর্যাদাকে উচ্চকিত করেছে
এবি পার্টির ১ম জাতীয় কাউন্সিলের একটি বড় ধাপ ছিল আমাদের জাতীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ (এনইসি) নির্বাচন। আল্লাহর রহমতে গত ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর সেটি আমরা সুন্দরভাবে শেষ করতে পেরেছি।
এই নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল খুব অল্প, মাত্র ৩১৫ জন। এরা মূলত: বেশীরভাগই দলের প্রতিষ্ঠাকালীন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং পরে সংযুক্ত দলের বিভিন্ন শাখার প্রতিনিধিত্বশীল নেতৃবৃন্দ। ৩১৫ জন ভোটারের মধ্যে ভোট প্রদান করেছেন ৩১১ জন, যার কাস্টিং হার ৯৮% এর বেশী। এটা খুবই আশাপ্রদ ব্যপার। ভোটার অল্প হলেও ২১ পদের জন্য মোট প্রার্থী ছিল ৬০ জন, অর্থাৎ প্রতিটি পদের বিপরীতে প্রার্থী সংখ্যা ৩। যেহেতু প্রত্যেক ভোটারকে ২১ টি করে ভোট দিতে হয়েছে তাই এই ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া ও ফলাফল তৈরী ছিল সময় সাপেক্ষ এবং জটিল। সেজন্য আমাদেরকে অনলাইন-অফলাইন মিলিয়ে দুই দিনব্যাপী ভোট গ্রহণ এবং গননা করতে প্রায় ৮ ঘন্টা সময় ব্যয় করতে হয়েছে। নতুন দল হবার কারণে আমরা ফিজিক্যালি সবাইকে উপস্থিত হয়ে ভোট দানে উৎসাহিত করেছিলাম। সম্মানিত প্রার্থী ও ভোটার গণও সশরীরে উপস্থিত হয়ে পুরো ভোট প্রক্রিয়াকে জাকজমক ও উৎসবমূখর করে তুলেছিলেন।
চুড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রস্তুত ও যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়গত ত্রুটির কারণে আমাদের দলের তুরস্ক শাখাসহ আন্তর্জাতিক টিমের কয়েকজন এবং দেশের অভ্যন্তরে কয়েকজন নারী নেত্রীসহ ১০ জনের মত গুরুত্বপূর্ণ ভোটার তালিকায় সংযুক্ত হতে পারেননি। এটা আমাদেরকে খুবই ব্যথিত ও মর্মাহত করেছে। এজন্য আমরা ভীষণ দূ:খিত ও সংশ্লিষ্টদের নিকট নি:শর্ত ক্ষমাপ্রার্থী।
অসর্তকতাবশত: অনলাইনে ভোট দেওয়া ১ জন সম্মানিত ভোটারের ভোট কাউন্ট থেকে বাদ পড়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে, ভোট প্রদানের নিয়ম না মানায় ৬ টি ভোট বাতিল হয়েছে, ভোটার ব্যালটে সিরিয়াল নম্বর উল্লেখ থাকায় অনেকে আপত্তি তুলেছেন- এগুলো সবই ছিল আমাদের অনভিজ্ঞতাসূচক সীমাবদ্ধতার ফসল। প্রচার-প্রচারণায় আচরণবিধি লংঘনের কিছু অভিযোগ এসেছে। যেমন, একজনের পোস্টারের উপর আরেকজনের পোস্টার লাগানো, গোপনে (স্লিপ দিয়ে) তালিকা সরবরাহ, ফেসবুকে পরামর্শ মূলক তালিকা প্রকাশ করা ইত্যাদি। এ জাতীয় অভিযোগগুলো আসার সাথে সাথেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে গিয়ে আমরা এমন সিনিয়র ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করি যারা আরও নিবিড়ভাবে সময় দিতে পারলে নির্বাচন আরও অনেক বেশী ত্রুটিমুক্ত করা যেতো। যেসকল ত্রুটি এবার আমাদের চোখে ধরা পড়েছে ভবিষ্যতে এপস্ ভিত্তিক ভোটসহ আরও কিছু পদক্ষেপ নিলে তা নিরসন করা সম্ভব হলে ইনশা’আল্লাহ্।


নির্বাচন ছিল আমাদের জন্য একটি বিরাট পরীক্ষা
সার্বিক বিচারে এই নির্বাচন ছিল আমাদের জন্য একটি বিরাট পরীক্ষা। নতুন অভিনব এই ব্যবস্থার সাথে আমরা কেউ তেমন পরিচিত নই। অনেকেই আছেন জীবনে যারা এই প্রথম কোন নির্বাচনে ভোটে দাড়িয়েছেন এবং নিজের জন্য প্রচারণা চালিয়েছেন। এবারের নির্বাচনকে জাকজমক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে বিশাল ভূমিকা রেখেছেন দলের তৃণমূল নেতৃবৃন্দ। পূর্বে যারা এনইসি সদস্য ছিলেন তাদের ধারনা ছিল যেহেতু তারা বেশী পরিচিত ও দলের নীতি নির্ধারণী ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন তাই সহজেই জয়লাভ করবেন। কিন্তু তৃণমূলের প্রার্থীদের গণসংযোগ ও প্রচারণার কারণে সিনিয়র নেতাদের টনক নড়ে। তারাও শেষ পর্যন্ত প্রচার প্রচারণায় আত্মনিয়োগ করতে এবং ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিতে বাধ্য হন। এবারের নির্বাচন দলের ভোটারদের সম্মান ও আত্মমর্যাদাকে উচ্চকিত করেছে। দল কোন ব্যক্তি বিশেষের মর্জি বা অল্প কয়েকজনের কথায় চলবেনা, সকলের মতামতের গুরুত্ব সন্নিবেশিত করেই দলের নেতৃত্ব নির্ধারিত হবে এবারের নির্বাচনের এটাই সবচেয়ে বড় ম্যান্ডেট। যে যাই বলুক, প্রচার-প্রচারণা, অপপ্রচার বা ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করুক, এনইসি ভোটারদের যতই আন্ডারমাইন্ড করুক, বাস্তবে সকল কিছুকে ম্লান করে দিয়েছে নির্বাচনের ফলাফল। সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে দলের সর্বস্তরের নেতারা অনেক সচেতন ও যোগ্য হয়ে উঠেছেন। আশ্চর্যজনক ব্যপার হলো, যারা নির্বাচিত হয়েছেন বা যারা নির্বাচিত হননি প্রত্যেকেই কম-বেশী সম্মানসূচক ভোট পেয়েছেন। এতে প্রমানিত হয় নেতারা যার যার জায়গায় যথেষ্ট জনপ্রিয়। নিজের অঞ্চল বা কর্মপরিধির বাইরেও ভোট পাওয়া প্রমাণ করে প্রার্থী হওয়া নেতারা প্রত্যেকেই যোগ্য ও নেতৃত্ব দেয়ার জন্য সামর্থ্যবান। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ মেনে আমরা যদি সামনে পথ চলতে পারি এই ছোট্ট মডেল নির্বাচন হতে পারে আমাদের জন্য বিশাল আশীর্বাদ।
আমি ৩১৫ জন ভোটারের প্রত্যেকের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই। ৬০ জন প্রার্থীর সকলকে শ্রদ্ধাভরে ধন্যবাদ দিচ্ছি। নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ও কমিশন শেষ মূহুর্তে এসে যে অসীম ধৈর্য ও ত্যাগের নজীর রেখেছেন তা ইতিহাস হয়ে থাকবে।
প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আসুন নিজেদের গড়া এই শত বন্ধনকে সহস্র প্রাণের শৃঙ্খলে লক্ষ কোটি স্বপ্নে রূপান্তরিত করি। মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালা আমাদের সহায় হোন।
সামনে আরও বড় দু’টি কাজ আমাদের চ্যালেঞ্জ আকারে রয়েছে। (১) দলের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন এবং (২) সুন্দরভাবে কাউন্সিল সম্পন্ন করা। নিশ্চয়ই আপনারা সেজন্য সর্বোচ্চ শ্রম দিতে উদগ্রীব। আজ থেকে শুরু হোক সে বিনিদ্র প্রচেষ্টা।
আমার স্বপ্ন আমার দেশ
এবি পার্টির বাংলাদেশ
— বিনীত—
মজিবুর রহমান মঞ্জু
সদস্যসচিব
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি
প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আসুন নিজেদের গড়া এই শত বন্ধনকে সহস্র প্রাণের শৃঙ্খলে লক্ষ কোটি স্বপ্নে রূপান্তরিত করি। মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালা আমাদের সহায় হোন।
সামনে আরও বড় দু’টি কাজ আমাদের চ্যালেঞ্জ আকারে রয়েছে। (১) দলের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন এবং (২) সুন্দরভাবে কাউন্সিল সম্পন্ন করা। নিশ্চয়ই আপনারা সেজন্য সর্বোচ্চ শ্রম দিতে উদগ্রীব। আজ থেকে শুরু হোক সে বিনিদ্র প্রচেষ্টা।
আমার স্বপ্ন আমার দেশ
এবি পার্টির বাংলাদেশ
— বিনীত—
মজিবুর রহমান মঞ্জু
সদস্যসচিব
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি